শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:০৪ অপরাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগর বিএনপি’র সাতটি থানার আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা যানজট নিরসন দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার উন্নয়নে আরএমপি’র মতবিনিময় সভা শ্যামনগরে এবার কৃষকরা আমন ধানের আশানুরুপ ফলন পেয়েছে পাবনায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ১জন আহত শাজাহানপুরে বিএনপি’র চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে ছাত্রদলের দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত মান্দায় বিল উন্মুক্তের দাবিতে জেলেদের সংবাদ সম্মেলন সভাপতির স্বৈরাচারী আচরন স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতিতে পাবনা শহর সমাজ সেবা কার্যালয়ের কার্যক্রম স্থবির হাবিপ্রবিতে আবাসন সংকট-হলে থেকেও অনাবাসিক অনেক ছাত্র রাজশাহী মহানগরীতে নাশকতা ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের অভিযোগে আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকসহ গ্রেফতার ১৪ রাজশাহীতে অর্ধশত বোতল ফেনসিডিল-সহ মাদক কারবারী গ্রেফতার

বিষধর রাসেল ভাইপারের উপদ্রব, মিলছে না শ্রমিক: বরেন্দ্র অঞ্চলে নষ্ট হচ্ছে পাকা ধান

Reading Time: 2 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
বরেন্দ্র অঞ্চলে অগ্রহায়ণে শুরু হয় মাসব্যাপী আমন ধান কাটার উৎসব। এবারও সোনালি ধানে ভরে গেছে দিগন্তজোড়া মাঠ। কিন্তু প্রাণঘাতী রাসেল ভাইপার আতঙ্কে ধান কাটা পরিযায়ী শ্রমিকের দেখা মিলছে না রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁর প্রায় ৯ হাজার ৩২০ বর্গ কিলোমিটার বিস্তীর্ণ বরেন্দ্র অঞ্চলে।
কৃষকরা জানান, গত কয়েক বছর ধরে বরেন্দ্র অঞ্চলের ধানখেতে রাসেল ভাইপার বা বিষধর চন্দ্রবোড়া সাপের উপদ্রব বেড়েছে। এই সাপের কামড়ে গত কয়েক বছরে শুধু বরেন্দ্র অঞ্চলে মারা গেছে শতাধিক ধান কাটা শ্রমিক। সাপের ভয়ে বাইরের জেলা থেকে এবার ধান কাটা শ্রমিক আসছে না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজশাহীর গোদাগাড়ী, তানোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমনুরা, নাচোল ও গোমস্তাপুর, নওগাঁর নিয়ামতপুর, সাপাহার, পোরশার লালমাটির জমিতে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব সবচেয়ে বেশি। পাকা ধানের জমিতে ইঁদুর শিকার করতেই মূলত এই সময়ে রাসেল ভাইপার আইলের গোপন গর্ত থেকে বের হয়। আর শ্রমিকরা ধান কাটতে গিয়ে সাপের ছোবল খায়। বিষধর এই সাপের ছোবলে শ্রমিকরা কেউ কেউ ঘটনাস্থলেই মারা যায়। কেউ চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাসপাতালে প্রাণত্যাগ করেন। কেউ চিকিৎসায় প্রাণে বেঁচে গেলেও বিষের প্রভাব থাকে অনেকদিন। অনেক শ্রমিক কয়েক বছর পরেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন না। কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরেন্দ্র অঞ্চলে রাসেল ভাইপারের আতঙ্কে শ্রমিকরা এখন হাঁটু পর্যন্ত গামবুট পায়ে দিয়ে ধান কাটতে জমিতে নামছেন। ধান কাটার মৌসুমে দলে দলে পরিযায়ী শ্রমিক (অন্য অঞ্চল থেকে আগত শ্রমিক) আসতেন বরেন্দ্র এলাকায়। এবার সেখানে শ্রমিকদের দেখা মিলছে না। ফলে পাকা ধান মাঠেই ঝরে পড়ছে। বরেন্দ্র অঞ্চলের কেন্দুয়া গ্রামের কৃষক সনিরুল ইসলাম জানান, গত কয়েক বছর ধান কাটার সময় ৬ জন শ্রমিক রাসেল ভাইপারের কামড়ে মারা গেছে। আহত হয়েছেন আরও ১৭ জন। কেন্দুয়াসহ আশপাশের মাঠগুলোতে রাসেল ভাইপারের উপদ্রব বেড়েছে। ফলে ভয়ে এবার বাইরের কোনো শ্রমিক আসেননি। ধান কাটা নিয়ে গ্রামের কৃষকরা বিপদে আছেন।
গোদাগাড়ীর খিরিন্দা গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, তিনি ১০ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছেন। ধান পেকে জমিতে পড়ে আছে কিন্তু কাটার শ্রমিক পাচ্ছেন না। গত সপ্তাহে ধান কাটার সময় কৃষক শরিফুলকে সাপে কামড়ায়। হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েও অসুস্থ অবস্থায় এখন সে বাড়িতে আছে। এই এলাকায় এক সপ্তাহে তিনটি রাসেল ভাইপার মারা হয়েছে। অন্যদিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাসেল ভাইপারের কামড়ে গত বছর ২২ জন ধান কাটা শ্রমিক মারা গেছে। এছাড়া একই সময়ে ৫৭০ জন সাপে কাটা রোগী চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। এ বছরের ১১ মাসে রাসেল ভাইপারের কামড়ে আরও ১৬ জন মারা গেছেন। রাজশাহীর সিভিল সার্জন ডা. সাঈদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, সাপে কাটা রোগী মারা গেলে বা চিকিৎসা নিতে এলে তারা নাম ঠিকানা ও সংখ্যার হিসাব রাখেন। উপজেলা পর্যায়ে প্রতিষেধক এন্টিভেনাম সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাজশাহী কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক কৃষিবিদ শামছুল ওয়াদুদ বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চলজুড়ে শ্রমিকদের মোটা জিন্সে প্যান্ট ও গামবুট পায়ে দিয়ে ধান কাটার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বরেন্দ্র এলাকার মসজিদ থেকে মাইকিং করে প্রতিনিয়ত ধান কাটা শ্রমিকদের সতর্ক ও সচেতন করা হচ্ছে।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com